পরিচিতি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জেলার শিবগঞ্জ উপজেলাধীন প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়ের ধ্বংস স্তুপের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের
বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ঐতিহাসিক সোনামসজিদ বক্ষে চির
নিদ্রায় শায়িত আছেন। তাঁরই নামে তাঁর সমাধী সংলগ্ন পুকুর পূর্ব পাড়ে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ডিগ্রী কলেজটি অবস্থিত। ১৯৯৫ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটি
০১/০৭/ ১৯৯৫ সালে ১৯৯৫-১৯৯৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী শিক্ষা বোড কর্তৃক ১ম স্বীকৃতি লাভ
করে এবং ০১/০৮/২০০১ সালে ২০০১-২০০২ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডিগ্রী
(পাস) কোর্স অধিভূক্তি লাভ করে।
ধরণঃ বেসরকারি কলেজ
।
স্থাপিত: ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ।
এমপিও ভূক্তঃ ০১/০৩/১৯৯৮ খ্রিঃ
অধ্যক্ষঃ মোহাঃ জামিনুর
রহমান
শিক্ষক কর্মচারীঃ ৭৩
শিক্ষার্থী সংখ্যাঃ
৯১০ (বর্তমান)
স্মানক: বি,এ ( পাস ) , বি,এস,এস ( পাস) ও
বি,বি,এস (পাস )
উচ্চ মাধ্যমিকঃ মানবিক,
বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ
ঠিকানাঃ সোনামসজিদ, ডাকঃ সোনামসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
অধিভূক্তিঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
কলেজ কোডঃ উচ্চ মাধ্যমিক-১৮৩০, স্নাতক-২৬১৮
EIIN NO: 124749
EMAIL: sonamosjidcollege@gmail.com
MPO CODE: 8505073201
ওয়েব সাইট: www.bcmjdc.edu.bd
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
কলেজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাঃ প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এস,এম হাদিকুল ইয়াজদানী
এবং বর্তমান অধ্যক্ষ মোহাঃ জামিনুর রহমান ১৯৯৪ সালে এম,এস,এস (রাষ্ট্রবিজ্ঞান)
বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ
উদ্দীন ভবনের সামনে চায়ের দোকানে বসে শিক্ষা-দ্বিক্ষায়
পিছিয়ে পড়া অবহেলিত ঐতিহাসিক সোনামসজিদ এলাকায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা এ
বিষয়ে আলাপ আলোচনা করেন এবং দীর্ঘ আলোচনান্তে
দুইজনে কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। পরীক্ষা শেষ করে দুইজন নিজ এলাকায়
ফিরে আসেন এবং কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ব্যাপক প্রচার প্রচারনার অংশ হিসেবে এলাকার
শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সাথে আলাপ আলোচনা শুরু করেন। কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এলাকার
সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়ে সর্বসাধারনের দানকৃত অর্থ দিয়ে সোনামসজিদ সংলগ্ন
পুকুরের পূর্বপাড়ে মানুষের দানকৃত ৭০,০০০/- টাকায় ২৫ কাঠা জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে পাশর্^লাগা আরও বেশকিছু জমি ক্রয় করে কলেজের সীমানা বৃদ্ধি করেন।
কলেজের নামকরণঃ ১৯৯৫ সালে
কলেজটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া অবহেলিত গৌড়ের রাজধানী
সোনামসজিদ এলাকার সর্বসাধারনের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত
কলেজের প্রতিষ্ঠাকালে কলেজটির নাম ছিল সোনামসজিদ আনক বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর কারিগরি
ও কৃষি কলেজ। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ২০০০ সালে ডিগ্রী (পাস) কোর্স চালু করার জন্য জাতীয়
বিশ^বিদ্যালয় বরাবর আবেদন করেন কিন্তু কারিগরি ও কৃষি কলেজে ডিগ্রী
(পাস) কোর্স চালু করার বিধান না থাকায় ডিগ্রী (পাস কোর্স) চালু করার স্বার্থে ২০০০
সালে কলেজের নামের আংশিক পরিবর্তন করে সোনামসজিদ বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর আনক কলেজ নামকরণ
করা হয় এবং ২০০১ সালে ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষে কলেজটি ডিগ্রী ( পাস ) কোর্স অধিভূক্তি
লাভ করে। বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এর নামের পূর্বে সোনামসজিদ ও মধ্যে
আনক শব্দ দুটি নিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের আপত্তি থাকায় ২০১২
সালে আবারও কলেজের নাম সংশোধন করে নামকরন করা হয় “বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন
জাহাঙ্গীর ডিগ্রী কলেজ”।
অবদানঃ কলেজ প্রতিষ্ঠা
লগ্নে মোঃ হবিবুর রহমান বিশ্বাস (পারদিলারপুর), মোহাঃ আবু সাইদ মাষ্টার (কয়লার দিয়াড় সন্ন্যাসি), মোহাঃ হারেস উদ্দিন ( নামো ধোবড়া ) ও মোঃ সেতাউর রহমান পচা
(পারদিলালপরু লয়া গ্রাম) এদের অবদান উল্লেখযোগ্য। এরা সকলেই জমি, অর্থ, বাঁশকাঠ, মেধা,শ্রম ও অক্লান্ত
পরিশ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেন। এছাড়াও কলেজ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই সার্বিকভাবে সহযোগিতা
করেন মোঃ রফিকুল ইসলাম অধ্যক্ষ তোহাখানা নিয়ামতিয়া আলিম মাদ্রাসা,ডাঃ আতাউর রহমান (বালিয়াদিঘি),ডাঃ মোঃ তোজাম্মেল হক (টিয়াকাটি), মোঃ আকিমুদ্দিন (সালামপুর), মোঃ ইসকোদ আলি ফকির (সালামপুর) , মোঃ মনিরুল ইসলাম মুটু ( সালামপুর ), মোঃ তাহির উদ্দিন (পিরোজপুর তোহাখানা)। উল্লেখ্য কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন
থেকেই কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য মেধা ও শ্রম দিয়ে
প্রানপণ চেষ্টা করেন প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জনাব এস,এম ,হাদিকুল ইয়াজদানী, বর্তমান অধ্যক্ষ মোহাঃ জামিনুর রহমান , মোহাঃ মতিউর রহমান সহকারি অধ্যাপক (অর্থনীতি), মোহাঃ সেতাউর রহমান (সহকারি অধ্যাপক) ইসলামের ইতিহাস, এ ছাড়াও সার্বক্ষনিক পাশে থেকে সহযোগিতা করেন মোহাঃ আব্দুল মবিন
সহকারি অধ্যাপক (ইতিহাস), মোহাঃ নুরুল ইসলাম
সহকারি অধ্যাপক (ভূগোল), মোহাঃ আনোয়ারুল হক
সহকারি অধ্যাপক (যুক্তি বিদ্যা) মোহাঃ টিপু সুলতান ( অফিস সহকারি) ও মোহাঃ মনিরুল ইসলাম
(৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী।। এদের অবদান যুগযুগ ধরে সকলের নিকট স্বরণীয় হয়ে থাকবে।
একাডেমিক তথ্যঃ বর্তমানে
এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে (০১) মানবিক বিভাগে বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটিসহ ১০ টি বিষয় যথাক্রমে- অর্থনীতি,পৌরনীতি ও সুশাসন,সমাজ বিজ্ঞান, ভূগোল,যুক্তিবিদ্যা, ইতিহাস,ইসলামের ইতিহাস,ইসলামী শিক্ষা, মনোবিজ্ঞান ও কৃষি শিক্ষা (০২) বাণিজ্য বিভাগে বাংলা,ইংরেজি ও আইসিটিসহ ০৪ টি বিষয় যথাক্রমে- হিসাব বিজ্ঞান,ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং,ব্যবসা ব্যবস্থাপনা,পরিসংখ্যান,কৃষি শিক্ষা ও (০৩)
বিজ্ঞান বিভাগে বাংলা,ইংরেজী ও আইসিটিসহ ০৫ টি বিষয় যথাক্রমে- পদার্থ বিজ্ঞান. রসায়ন বিজ্ঞান,জীব বিজ্ঞান,উচ্চতর গণিত,প্রকৌশল অংকন ও ওয়ার্কসপ
প্রাক্টিস এবং ¯œাতক পর্যায়ে বাংলা,ইংরেজি ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভূদ্বয়ের ইতিহাসসহ ১২ টি বিষয়
যথাক্রমে-অর্থণীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, ভূগোল,দর্শন, ইতিহাস,ইসলামের ইতিহাস,ইসলামী শিক্ষা,মনোবিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান, ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং ও ব্যবসা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অধ্যয়ণের
সুযোগ রয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ের ৪৯ জন শিক্ষক কর্মরত থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
শিক্ষক কর্মচারীর তথ্যঃ অধ্যক্ষ-০১,উপাধ্যক্ষ-০১, সহকারি অধ্যাপক-৩০,প্রভাষক-১৩,গ্রন্থাগার প্রভাষক-০১,সহকারি শিক্ষক গন্থাগার-০১, শরীরচর্চা শিক্ষক-০১ প্রদর্শক-০৫,ইন্সট্রাক্টর-০১,৩য় শ্রেণীর কর্মচারী-০৩,ল্যাব সহকারি-০৪ ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী-১২ জন।
নথিভূক্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাঃ শুরুতে ১৯৯৫ সালে ২২৭ জন এবং বর্তমান ২০২৩ সালে ৯১০ জন।
বর্তমান শিক্ষা পরিষদঃ সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানে ৩০ জন সহকারি অধ্যাপক ও ১৩ জন প্রভাষক সমন্বয়ে শিক্ষা
পরিষদ বিদ্যমান।
ভবন সমুহঃ কলেজ প্রতিষ্ঠার
শুরুতে ক্রয়কৃত ২৫ কাঠা জমির উপরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ২ টি আধাপাকা টিনসেড ভবন নির্মান করা হয়। ১টি প্রসাশনিক ভবন এবং ১টি একাডেমিক
ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। একাডেমিক ভবনটি প্রাকৃতিক ঝড়হাওয়ায় ভেঙে পড়ে। তবে প্রশাসনিক
ভবনটি এখনও রয়েছে যা বর্তমানে সাইকেল গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে আলাউদ্দিন
হোসেন শাহ্ দ্বিতল ভবন, ২০০১ সলে হযরত শাহ্
নেয়ামতুল্লাহ্ দ্বিতল ভবন যা বর্তমানে প্রশাসনিক
ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ২০১৩ সালে চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মান করা হয়।
গ্রন্থাগারঃ বীরশ্রেষ্ঠ
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ডিগ্রী কলেজ এর গ্রন্থাগার শেখ রাসেল কর্নার সহ নতুন
পুরাতন বইয়ের সম্বনয়ে সাজানো হয়েছে। বর্তমানে মোট বইয়ের সংখ্যা ৩৫১৫ খানা।
গবেষণাগারঃ আমাদের ০৬ টি গবেষণাগার
রয়েছে যা পরীক্ষণ করার জন্য আধুনিক ও আদি যন্ত্রপাতি দ্বারা সজ্জিত।তবে যন্ত্রপাতি
পর্যাপ্ত নয়। ভবিষ্যতে বৃদ্ধি করা হবে।
তথ্য পরিসেবাঃ বীরশ্রেষ্ঠ
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ডিগ্রী কলেজ এর সকল তথ্য উপাত্তকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায়
আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কলেজের নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু আছে এবং অনলাইনে শিক্ষার্থীদের
ভর্তি,
বেতন, পরীক্ষার ফি দেয়ার
ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলেজের প্রতিটি ক্লাশরুম ডিজিটাল সাউন্ড সিষ্টেমের আওতায় আনা হয়েছে
এবং বর্তমনে কলেজটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
শেষ কথাঃ অত্র কলেজের প্রতিষ্ঠাতা
অধ্যক্ষ ছিলেন এস,এম হাদিকুল ইয়াজদানী।
তাঁর আন্তরিকতা, দক্ষতা, বিচক্ষণতা সর্বোপরি সাহসিকতার সঙ্গে সকল প্রতিকুলতা মোকাবেলা
করে কলেজটিকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালান। বর্তমানে
এ কলেজের দ্বিতীয় অধ্যক্ষ মোহাঃ জামিনুর রহমান পূর্বসূরীর কর্মনীতিকে অনুসরণ করে শিক্ষা,শৃঙ্খলা,প্রগতি এই মূল মন্ত্রকে
হৃদয়ে লালন করে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির আধুনিক ধারায় সিক্ত হয়ে বর্তমান সরকারের “ভিষণ-২০২১” ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ডিগ্রী কলেজের মানোন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছেন।
লেখকঃ
মোহাঃ জামিনুর রহমান
অধ্যক্ষ
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ডিগ্রী কলেজ
সোনামসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।